বাংলাদেশ অনলাইন : | বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪
কসভোর স্বাধীনতার দাবিকে কেন্দ্র করে আলবেনীয় জাতিগোষ্ঠীর ওপর ১৯৯৮ সালে ভয়াবহ নির্যাতন শুরু করে ইউগোস্লাভিয়ার সার্ব বাহিনী। ইউগোস্লাভিয়ান প্রেসিডেন্ট স্লোবোদান মিলোশেভিচের সেনাবাহিনীর চালানো নৃশংসতার জবাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় যুক্তরাষ্ট্র।
এরপর ইউগোস্লাভিয়ায় শুরু হয় বোমা হামলা। একপর্যায়ে ১৯৯৯ সালের ৭ মে মধ্যরাতে বেলগ্রেডে চীনা দূতাবাসে পাঁচটি বোমা ফেলে মার্কিন জঙ্গিবিমানগুলো। ফলে বিধ্বস্ত হয়ে যায় দূতাবাস ভবন। সেখান থেকেই চীনের সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্বের সম্পর্কে ফাটল দেখা দেয়।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এ ঘটনার পর বেলগ্রেডে যেসব চীনা ছিল তারা প্রতিবাদ করা এবং রাস্তায় নামার সিদ্ধান্ত নেয়। সে সময় বেলগ্রেডে বসবাসরত চীনাদের সংখ্যা ছিল অনেক।
তারা পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখাতে রাস্তায় নামেন। দিনের শেষে বিক্ষোভকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় তিন হাজারে। শুধু বেলগ্রেড নয় এ ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল চীনের মূল ভূখণ্ডেও। ন্যাটোর এই বোমা হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠে চীনা জনগণ।
চীনের সঙ্গে পশ্চিমাদের শত্রুতার ইতিকথা
ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর ইরানকে সাহায্য করেছে চীন
হামলার তীব্র প্রতিক্রিয়ায় চীনের সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্বের সম্পর্ক একেবারে তলানিতে পৌঁছায়। যদিও সামরিক জোট ন্যাটো ও তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন জোড়াতালি দিয়ে সম্পর্ক উন্নত করতে উদ্যোগী হন।
সে সময় গোয়েন্দা তথ্যের ত্রুটি দেখিয়ে চীনা দূতাবাসে হামলার কথা স্বীকার করে ন্যাটো কর্মকর্তারা। যদিও দুঃখ প্রকাশের পরও বোমা হামলা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয় সামরিক জোটটি।
সে সময় বেলগ্রেডে বসবাসকারী চীনা ব্যবসায়ী হং শ্যেন জানান, চীনের তরুণ প্রজন্ম সে সময় কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি ঝুঁকতে শুরু করেছিল। কিন্তু ওই বোমা হামলা তাদের সেই মানসিকতাকে সম্পূর্ণ ভেঙে দেয়।
ওই হামলার পর চীনের তরুণরা বিশ্বাস করতো না যে আমেরিকার কোনো রকম মানবিকতা বোধ আছে।
এদিকে ন্যাটো ও পশ্চিমারা ওই ঘটনাকে দুর্ঘটনা আখ্যা দিলেও কয়েক মাস পর লন্ডনের অবজারভারসহ বেশকিছু গণমাধ্যম একটি তদন্তে গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্য উদ্ধৃত করে লেখে যে, ওই হামলা ছিল ‘ইচ্ছাকৃত’। যদিও ব্রিটিশ এবং আমেরিকান সরকার সেই তথ্য ‘বানোয়াট’ বলে সরাসরি অস্বীকার করে।
কসভো যুদ্ধকে কেন্দ্র করে ইউগোস্লাভিয়ায় ন্যাটোর বোমা হামলা চলেছিল ৭৮ দিন ধরে। কসোভো থেকে ইউগোস্লাভিয়া সেনা প্রত্যাহারে সম্মত হওয়ার পর ১৯৯৯ সালের ১০ জুন এই হামলার পরিসমাপ্তি ঘটে।
পরের বছর ২০০০ সালে ইউগোস্লাভিয়ার প্রেসিডেন্ট স্লোবোদান মিলোশেভিচকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলা চলাকালীন ২০০৬ সালে কারাগারে তার মৃত্যু হয়।
Posted ১১:২৩ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh